প্রথম প্রাক্তনী সাধারণ সভা ২০২৪

 

সভায় বক্তব্য রাখছেন বিশিষ্ট প্রাক্তনী ড: গৌতম প্রসাদ সরখেল (১৯৬৯ ব্যাচ)

আজকে গিয়েছিলাম আমাদের স্কুল, "দমদম কৃষ্ণ কুমার হিন্দু একাডেমি"তে , মানে বলতে পারো  আমাদের প্রাথমিক বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। হ্যাঁ ঠিকই বলছি প্রাথমিক তথা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, আবার করে বললাম কারন আমি বা আমরা যারা ষাটোর্ধ বুড়ো খোকা গুলো কয়েক যুগ পরে আবার করে মিলিত হলাম আমাদের সেই বিদ্যালয়ে যেটা আমাদের সহপাঠীদের দৈনিক মিলন ক্ষেত্র ছিলো! তখন হয়তো শিক্ষা লাভের থেকেও বড় আকর্ষণ ছিলো এক্কেবারে প্রাথমিক স্তরের খেলা ধুলা যেমন মার্বেল গুলি, ডাঙ্গুলি,  টেনিস বলে ক্রিকেট, ফুটবল এমন কি পিট্টু আইসবাইস এর মতো খেলা, যেগুলোর নামই হয়তো এযুগের ছেলে মেয়েরা যারা আমাদের সন্তান সমো তারা খেলেনি এমন কি নামও শোনেনি ! তবুও সেই তাদেরই আহ্বানে ,আকর্ষণে আজ আমরা বেশ কয়েক জন সদ্য প্রবীণ ছেলেরা আমাদের অতি প্রিয় স্কুলে ( তা সে যেকোনো কারণেই হোক), মিলিত হয়েছিলাম!

 আমরা নবীন এবং প্রবীণ প্রাক্তনীরা

আমরা ছিলাম ১৯৭৯ ম্যাড তদুপরি ১৯৮১ উন্মাদ ব্যাচ এর বেশ কিছু ছেলে, ভেবেছিলাম আমারই হয়তো প্রবীণতম কিন্তু পৌঁছে দেখি আমাদের থেকেও এক যুগ আগের ছাত্ররাও ওদের ডাকে সাড়া দিয়ে স্কুলে পৌঁছে গেছেন! আজকের আলোচনা সভার উদ্দেশ্য ছিলো একটি পথ অনুসন্ধান, যাতে করে আমরা আমাদের স্কুলের যতো সম্ভব বেশি করে প্রাক্তনীদের এই বিশাল যজ্ঞে সামিল করতে পারি এবং আমাদের স্কুলের নাম টিকে ইতিহাসের পাতায় সদা উজ্জ্বল ভাবে এঁকে দিতে পারি!এই কর্ম কাণ্ডের প্রাথমিক রূপরেখা অঙ্কনের উদ্দেশ্যেই আজকের সদ্য প্রক্তনিদের আহবানে আমারা সারা দিয়েছি!

অপাতো ভাবে মনে করি আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি , ভুল - ঠিকের হিসাব সময়ের হতে ছেড়ে রাখাই ভালো !

 আলোচনার মাঝে তথ্য, উপদেশ, প্রস্তাব নথিভুক্ত করা

আমাদের ও আরো প্রবীণতর ছাত্রদের মন - শারীরিক ভাষায় এটাই উপলব্ধি করলাম একজন প্রাথমিক স্তরের ছাত্র থেকে শুরু করে প্রবীণতম মানুষ আজীবন কাল ছাত্রই! প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্কুল হোলো তার মাত্রী জঠোর বা আতুর ঘর যেখানে অ - আ, A - B, C-D দিয়ে শুরু হয় পথ চলা ! তার পর সময়ের সাথে সাথে চরাই - উতরাই পথে শিখতে শিখতে ছাত্র হয়েই এগিয়ে যায় জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ! কেও গন্তব্যে পৌছয় কেও পারে না, কেও আবার পৌঁছেও ঠাওর করতে পারে না, কিন্তু সময় থেমে থাকে না এগিয়ে যায় ওই ছাত্রকে সাথে নিয়ে ! আবার সময়ে অসময়ে, সুখে দুঃখে যে কোনো প্রাণী যেমন মায়ের কোল খুঁজে নেয় ক্ষণিকের স্বস্তির জন্য তেমনি আমাদের সকলের শিক্ষার আঁতুড় ঘর, আমাদের স্কুলের, বাৎসরিক "পুরাতনী সমাবর্তন", আমাদের মনে প্রানে অনাবিল আনন্দ, নূতন উদ্দীপনার সঞ্চার করবে বলেই বিশ্বাস করতে বড়ই ইচ্ছা করে! অতি প্রাক্তনী থেকে সদ্য প্রাক্তনী সকলের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা আমাদের সে পথকে আরো উপযুক্ত করে তুলবে বলেও বিশ্বাস করি!

সভায় বক্তব্য রাখছেন বিশিষ্ট প্রাক্তনী পার্থ প্রতিম হালদার (১৯৭৯ ব্যাচ)

এসো সকলে মিলে সে চেষ্টা করে দেখি ,হারবো না জানি , কারণ হারাবার কিছু নাই তবুও সকলে মিলে উচ্চ রবে বলি, "হারি জিতি নাহি লাজ"!

মাধ্যমিক স্তরে যখন ক্লাস ফাইভে মা বা বাবা এসে স্কুলের হল ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন তখন এই স্কুলটি কেই মহাসাগর মনে হয়েছিল , কিন্তু আজ এত গুলো বছর পেরিয়ে এসে বুঝতে পারি যদিও মহাসমুদ্রের তুলনায় মহাকাশ অনেক বেশি বিস্তৃত তবুও জলের উপস্থিতি বা প্রানের আতুর ঘর সেই প্রাথমিক স্তরের মহাসাগর! তাই অনুভব করি এই আতুর ঘর তথা মহাসাগরের পটভূমি টিকে ইতিহাসের পাতায় দীপ্ত রেখায় আঁকার একটা ছোট্টো প্রচেষ্টা না করার কোনো যুক্তি ই খুঁজে পাওয়া যাবে না , এই ভাবে হয়তো যুগের পর যুগ ধরে অনন্ত মহাকাশে উজ্জ্বল ,অতি উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের সাথে অনুজ্জ্বল কোনো তারার মতো ইতিহাসের ঘরে আমারও একটা ছোট্টো  বাসা হবে !

একই বেঞ্ছে এই যুগ, সেই যুগের প্রাক্তনীরা

জীবনাঙ্কের খাতায় প্রমাণিত হবে, "শুন্য থেকেই শুরু শুন্য তেই শেষ তারই মাঝে জীবনটার নানান রকম বেশ"!

এসো সকলে মিলে নিঃস্বার্থ ভাবে এই উদ্দ্যেশ্য কে সফল করে তুলি ----- !

- অভিজিৎ যশ (মাধ্যমিক ১৯৭৯ / উচ্চমাধ্যমিক ১৯৮১)


Post a Comment

0 Comments

Contact Form